পোষা প্রাণী ও জীবজন্তু

আপনার পোষা বিড়ালের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র

পোষা প্রাণি হিসেবে বিড়াল হতে পারে আপনার কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। তবে পোষা বিড়ালকে সত্যিকার অর্থে খুশি রাখতে হলে অনেক কিছুর ব্যবস্থা করতে হবে আপনাকে। বিশেষ করে যারা প্রথমবারের মতো বিড়াল পালতে যাচ্ছেন, তারা হয়তো অবাক হয়ে যাবেন যে কত কি লাগে প্রাণিটির। খুশির খবর হলো, আপনি যদি এই আকর্ষণীয় প্রাণিটি পালতে চান তাহলে বাংলাদেশে এ ধরনের অনেক ভালো দোকান আছে যাদের কাছে প্রয়োজনীয় সব কিছু পাবেন।

বিড়াল বা বিড়াল জাতীয় কোনো প্রাণি পুষতে আপনি যা কিনতে চাচ্ছেন বা যা যা প্রয়োজন হবে, এই লেখাটি সে সব বিষয় সম্পর্কে জানতে আপনার গাইড হিসেবে কাজ করবে।

১. খাদ্য

বিড়াল পোষার ক্ষেত্রে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সময়মতো তাকে খাবার দেওয়া। আপনার খাওয়ার সময় আপনার বিড়ালটি যদি আপনার চারদিকে ঘুর ঘুর করে, তাহলে আপনি খাবারের উচ্ছিষ্ট বা নষ্ট খাবার তাকে দিয়ে থাকেন। কিন্তু এতে শেষ পর্যন্ত বিড়ালের হজম প্রক্রিয়ায় সমস্যা দেখা দেয়। এজন্য আপনার প্রাণিটির জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা উচিৎ। এ ক্ষেত্রে আমরা দুই ধরনের খাবারের কথা ভাবতে পারি শুকনো খাবার ও বোতলজাত খাবার। আবার উভয় খাবারেরই সুবিধা এবং অসুবিধা আছে যা ভুলে গেলে চলবে না। আপনি আপনার বিড়ালের যত্ন নিয়ে সংশয়ে থাকলে দেখে নিন কীভাবে আপনার পোষা বিড়ালকে যেভাবে সুস্থ-সবল রাখবেন?

ক) শুকনো খাবার:

অধিকাংশ ব্যক্তিই তার পোষা বিড়ালকে শুকনো খাবার দিয়ে থাকে। এ ধরনের খাবার সস্তা, আবার বিড়াল এ খাবারের ফ্লেভার পছন্দও করে বটে। শুকনো খাবার বাসায় সংরক্ষণ করা অত্যন্ত সহজ। আপনি সকাল বেলা শুকনো খাবার খেতে দেবেন; আপনার বিড়াল সারা দিন ধরে তা অল্প অল্প করে খাবে। তবে বেশিরভাগ বিড়ালই শুকনো খাবার খেতে পছন্দ করে না, তারা বোতলজাত খাবার খেতে যতটা পছন্দ করে। তা ছাড়া শুকনো খাবারে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতিও থাকে। তবে মাঝে মাঝে তাকে বোতলজাত খাবার দিয়ে ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব।

খ) বোতলজাত খাবার

বিড়ালকে দেওয়ার জন্য আপনার আর একটি অপশন হচ্ছে বোতলজাত খাবার। বিড়ালের বোতলজাত খাবার অত্যন্ত পছন্দ করে। সামনে পেলে গোগ্রাসে খায় এ খাবার। কারণ এতে অধিক মাংস থাকে এবং এটি অধিক জৈব। যারা পোষা বিড়াল দিয়ে পোকা-মাকড় মারতে চায় তারা শক্তি বৃদ্ধির জন্য বিড়ালকে বোতলের খাবার খাওয়ায়। কিন্তু সমস্যা হলো বোতলজাত খাবারের দাম শুকনো খাবারের তুলনায় অনেক বেশি। আবার এ ধরনের খাবার দিলে সতর্ক থাকতে হবে যে অতিরিক্ত খাবার যেন তার সামনে না যায়; কারণ বিড়াল অত্যন্ত পেটুক ধরনের প্রাণি। তার সামনে যতো খাবারই দেওয়া হোক না কেন, সব খাবারই আস্তে আস্তে খেয়ে ফেলতে পারে সে। তাই আপনি যদি আপনার পোষা বিড়ালকে বোতলের খাবার দিতে চান, তাহলে নির্দিষ্ট সময় পর পর নিজের হাতে পরিমাণমতো তাকে দিতে পারেন।

২. মাছি তাড়ানো

বিড়ালের জন্য আর একটি অতি প্রয়োজনীয় জিনিস হচ্ছে ফ্লি কলার। অনেক সময় বিড়ালের সঙ্গে এ জিনিসটি বিনামূল্যে দেওয়া হয়। ফ্লি কলার ক্ষতিকারক পোকামাকড় ধ্বংস করে। যন্ত্রটি রাসায়নিক দ্রব্যের সাহায্যে মাছি ধ্বংস করে। তবে এ রাসায়নিক বিড়াল বা তা ছানার কোনো ক্ষতি করে না। যে কোনো বয়সের বা আকারের বিড়ালের জন্য সুবিধাজনক মাপের ফ্লি কলার পাওয়া যায়। সাধারণত কয়েকটি ফ্লি কলারের একটি প্যাকেজ পাওয়া যায় যেগুলো সহজেই বিড়ালের শরীরে পড়ানো ও শরীর থেকে খুলে নেওয়া সম্ভব। শুধু মনে রাখতে হবে যে মাঝে মাঝে এটি শরীর থেকে বদলাতে হবে, কারণ বিড়ালের দৈহিক বৃদ্ধি ঘটলে এটি শরীরে এঁটে যাবে। একটানা দীর্ঘদিন ফ্লি কলার ব্যবহার করলে শরীরে ক্ষত সৃষ্টি হওয়াসহ স্থায়ী ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

৩. বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

pet cat in Bangladesh

বিড়াল পোষার ক্ষেত্রে সবচেয়ে অপ্রীতিকর বিষয় যে বর্জ্য পরিষ্কার করা তা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। তবে খুশির সংবাদ হলো বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য বিভিন্ন ধরনের দামের বাক্স কিনতে পাওয়া যায় যা বিড়াল কেনার সময়ই সেই দোকান থেকে সংগ্রহ করতে পারেন। কম দামে এটি কিনতে পারবেন। তবে অনেকে বিশেষ ডিজাইন করে অনেক টাকা খরচ করেও এটি তৈরি করে থাকে।

৪. খেলনা

সবশেষে আমরা মজার কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। অনেক ধরনের খেলনাই Bikroy.com এবং অন্যান্য অনলাইন খুচরা বিক্রির দোকানে পাওয়া যায়, কিন্তু এগুলো কিছু ক্যাটাগরিতে ভাগ করা থাকতে পারে। বেশির ভাগ বিড়ালের মালিকরাই তাদের বিড়ালের জন্য একটি স্ক্র্যাচার কিনতে চায়, যাতে থাবা দিয়ে নিতে পারে, তাছাড়া বিড়াল আপনার আসবাব পত্র নষ্ট করে দিতে পারে। এটি বড় পোস্ট কিংবা অন্যান্য ফেলিন স্থাপত্যের এর ভুমিকা পালন করতে পারে, যেটি আপনার বাড়ির ভেতরে অথবা বাইরে রাখতে পারেন যাতে বিড়াল সেটি বেয়ে উঠতে পারে। এই পোস্ট পরিস্কার করার প্রয়োজন হয় কিন্তু খুবই কম।

অন্যান্য খেলনাগুলো আপনি যেমন ভাবছেন তেমনি বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। টানেল, পুশ মাইস এবং প্লাস্টিক বল হল বিড়ালের জন্য অন্যান্য খেলনা যা আপনি রাখতে পারেন। সাধারনত বিড়াল পছন্দ করে এমন সস্তা খেলনা কেনাই ভালো । প্রায়ই খেলনা জাতীয় জিনিস নষ্ট হয়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকে। নতুন করে কেনা অথবা প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন পড়ে। আরেকটি বিশেষ খেলনা হল ক্যাটনিপ বা পুদিনা বিষেশ তৃণ। এই তৃণ বিড়ালের যেকোনো ধরনের খেলনার সাথে দেওয়া যায়, যাতে বিড়াল অনেক্ষন আনন্দে থাকতে পারে। বিড়াল এটিতে থাবা দিতে পারে, ছিদ্র করতে পারে, এবং মাঝে মাঝে এটি খেতেও পারে, শুধুমাত্র একটু উস্মত্ত হলে। এই ক্যাটনিপের প্রভাবে বিড়াল তন্দ্রচ্ছন্ন হতে পারে এবং বিছুটা সিলি আচরন করতে পারে, এ ধরনের অনুভূতি তারা খুব উপভোগ করে। মনে রাখবেন, কিছু বিড়াল এই ক্যাটনিপের প্রভাব থেকে মূক্ত থাকতে পারে, এবং কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখায় না।

৫. ডিটারেন্ট

পরিশেষে, আপনার বিড়ালকে বাড়ির ভেতরে এবং বাইরে কিছু নির্দিষ্ট এলাকায় না যাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করা প্রয়োজন। সেটি তাদের নিজেদের প্রতিরক্ষার জন্য কিংবা আপনার আসবাবপত্রে প্রসাব করা থেকে বিরত রাখতে কিংবা সেগুলো নষ্ট করা থেকে বিরত রাখবে, এসব ব্যাপার হয়তো আপনার মানষিক সুস্থতার ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। আপনি যখন আপনার ইলেক্ট্রনিক রিপেলেন্ট কিংবা ইলেক্ট্রনিক রিপেলেন্ট সিস্টেমের পেছনে অনেক টাকা খরচ করছেন, এগুলোকে পর্যাপ্ত কার্যকরী দেখতে চাইলে, কম খরচে সমাধানের ব্যাবস্থা আছে। এটি সাধারনত আপনার আসবাব পত্র বা আন্যান্য জিনিসে সুগন্ধি স্প্রে করার র্পযায়ে নিয়ে যেতে পারে। কেনার আগে অবশ্যই যাচাই করে নেবেন যে এটি আপনার ফেলিন বন্ধুর জন্য ক্ষতিকর হবে না এবং আপনার জিনিসপত্রে দাগ ফেলবে না।

আরেকটি অপশন হল টেপ- কিছু খুচরা বিক্রির দোকানে মূল্যবান আসবাব পত্রে প্রয়োগের জন্য দাগ প্রতিরোধক বিশেষ টেপ বিক্রি করে। এটি আপনার বিড়ালকে আসবাব পত্র বেয়ে ওঠা থেকে বিরত রাখবে, যা কখনোই বাড়িতে মেহমানদের কাছে পুরোপুরি দৃষ্টি গোচর হবে না। এক্ষেত্রে একমাত্র চিন্তার বিষয় হল, এই টেপ প্রচুর পরিমানে লাগবে এমনকি ছোট বাড়ির ক্ষেত্রেও। আপনার পছন্দের বিড়ালটি কেনার আগে দেখে নিন বাংলাদেশে পোষা-প্রাণী কেনাবেচার টিপস

শুধু বিড়াল না, যে কোনো পোষা প্রাণি কিনতে চাইলে চলে আসুন Bikroy.com-এ এবং খুঁজে নিন হাজারো বিজ্ঞাপন থেকে।

Facebook Comments
সাবস্ক্রাইব করুন

No spam guarantee.

Show More

Related Articles

Back to top button
Close
Close