যানবাহন

বাংলাদেশের জনপ্রিয় সাশ্রয়ী মূল্যের বাইকগুলোর দাম

আপনি কি আপনার জীবনের প্রথম মোটরবাইকটি কেনার কথা ভাবছেন? তাহলে আপনি ঠিক জায়গাতেই এসেছেন!

বাংলাদেশের বহু মানুষের জন্যই জীবনের প্রথম মোটরবাইক কেনাটা তাদের বেড়ে ওঠার এক নতুন ধাপ। অনেকের জন্য এটা তাদের কষ্টের জমানো টাকায় করা প্রথম গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ, যা মোটরবাইকটিকে তাদের জীবনে আরো অমূল্য করে তোলে। 

ঢাকা শহরের দম বন্ধ করা ট্যাফিকের কারণে মোটরবাইক আজ চলার পথে সবচেয়ে জনপ্রিয় বাহন। বর্তমানে যাতায়াতের সবচেয়ে দ্রুততম মাধ্যম হচ্ছে এই মোটরবাইক, কেননা এদের আঁটসাঁট গড়ন এবং সরু আকৃতির সুবাদে রাইডাররা ট্র্যাফিক ধাঁধার ভিতর দিয়ে খুব সহজেই সবাইকে পাশ কাটিয়ে বের হয়ে যেতে পারে। আর গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়ার পরও তাদের হাতে পর্যাপ্ত সময় থেকে যায়।

এছাড়াও ইদানিং পাঠাও, উবার এবং হাংরি নাকি ও ফুডপান্ডার মত রাইড শেয়ারিং ও ডেলিভারি সার্ভিসগুলো তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠার ফলে অনেক উৎসুক মানুষ রাইডার হিসেবে ক্যারিয়ার তৈরি করার উদ্দেশ্যে মোটরবাইক কিনছেন। শহরে চলাচলকারী হাজার হাজার লোক এই সব বিখ্যাত ব্র্যান্ডগুলোর সাথে যুক্ত হয়ে নিজেদের সার্ভিস সরবরাহ করার জন্য মোটরবাইকের পেছনে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হচ্ছেন। কেননা এই ক্ষেত্রটিতে অন্যান্য প্রচলিত চাকরির তুলনায় কাজের ধরণ বেশ অনুকূল এবং ইনকামের পরিমাণও অনেক ভালো।

কিন্তু মার্কেটের এত এত নামী ব্র্যান্ডের ভেতর থেকে, প্রত্যেকটির মধ্যে শত শত আকর্ষণীয় মডেলের ভিড়ে আপনার জন্য কোন বাইকটা সেরা সেটা কিভাবে বুঝবেন?

আপনার প্রথম মোটরবাইকটি যেন একটি সফল ও কার্যকরী বিনিয়োগ হয় সেটা নিশ্চিত করার জন্য আগে থেকেই সব রকম রিসার্চ করে নেয়া ভালো। প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা মূলত পরামর্শ দিব যে আপনারা কম দামের অর্থাৎ নিম্ন স্তরের বাইক থেকে দেখা শুরু করুন, যেগুলো তুলনামূলক বেশি সাশ্রয়ী এবং লাভজনক হয়। এতে করে আপনারা উঁচু সারির দামি মোটরবাইকে হাত দেয়ার আগে বাইক চালানোর বেসিক নিয়মগুলো বুঝে নিতে পারেন এবং নিজের দক্ষতার উপর সম্পূর্ণ আত্মবিশ্বাস অর্জন করতে পারেন।

এই বছরে আমাদের সেরা পছন্দের বাইকগুলো

দেখে নিন এই বছরের সবচেয়ে জনপ্রিয় ৮টি মোটরবাইকের নাম, যার সবগুলো মোটরবাইকের দামই বাংলাদেশে ১.৫ লাখ টাকার নিচে

  1. রানার এডি-৮০এস ডিলাক্স
  2. ওয়ালটন স্টাইলেক্স নিউ
  3. হিরো এইচএফ ডিলাক্স
  4. হিরো প্যাশন এক্স প্রো
  5. হোন্ডা সিডি৮০
  6. হোন্ডা লিভো
  7. টিভিএস মেট্রো কেএস
  8. বাজাজ ডিসকভার ১২৫

রানার এডি-৮০এস ডিলাক্স

রানার এডি-৮০এস ডিলাক্স

  • ইঞ্জিন টাইপ – সিঙ্গেল সিলিন্ডার, ৪ স্ট্রোক
  • ডিসপ্লেসমেন্ট (সিসি) – ৮৫
  • সর্বোচ্চ পাওয়ার – ৪.৫৮ কিলোওয়াট @ ৮৫০০ আরপিএম
  • সর্বোচ্চ টর্ক/ ঘূর্ণন – ৫.৫ নিউটন-মিটার (N-m) @ ৫৫০০ আরপিএম
  • চূড়ান্ত গতি/ স্পিড – ৯০ কি.মি. প্রতি ঘন্টা (আনুমানিক)
  • মাইলেজ – ৫৫ কি.মি. প্রতি লিটার (কম্বাইনড)
  • কুলিং – প্রাকৃতিক এয়ার কুলিং
  • স্টার্ট করার পদ্ধতি – কিক এবং সেলফ-স্টার্ট
  • ইগনিশন টাইপ – সিডিআই
  • গিয়ার – ম্যানুয়াল; ৪টি স্পিড, ৪টি সামনে, বিপরীত গিয়ার নেই 
  • সামনের সাসপেনশন – হাইড্রোলিক,  টেলেস্কোপিক টাইপ
  • পেছনের সাসপেনশন – কয়েল স্প্রিং হাইড্রোলিক
  • ব্রেক (সামনে/পেছনে) – ড্রাম

২০০০ সালের মাঝামাঝি কোন একটি সময়ে যাত্রা শুরু করে রানার অটোমোবাইলস লিমিটেড এদেশে চলছে প্রায় ১৯ বছরেরও বেশি সময় ধরে। বাংলাদেশের বৃহত্তম মোটরবাইক ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানিগুলোর মধ্যে অন্যতম রানার বর্তমানে ৮০ সিসি থেকে ১৫০ সিসির মধ্যে ১২টি ভিন্ন মোটরবাইক মডেল প্রস্তুত করছে। দেশে ১০০ সিসির নিচে যত মোটরবাইক শো-রুমগুলোতে রয়েছে, তাদের মধ্যে সব ব্র্যান্ডকে ছাপিয়ে রানার-ই এখন মোটরবাইক মার্কেটে সবচেয়ে এগিয়ে।

রানার এডি ৮০এস ডিলাক্স মডেলটি আসলে রানার এডি ৮০এস বাইকটির নতুন এক ভার্সন। বাহ্যিকভাবে এর লুক ততটা আকর্ষণীয় মনে না হলেও ঢাকা শহরে ব্যবহারের জন্য মডেলটি এক কথায় আদর্শ। বাইকটির তুলনামূলক ছোট আকারের জন্য ট্র্যাফিক জ্যামের মধ্য দিয়ে একে খুব সহজে চালিয়ে পার হওয়া যায়।

ছোট ও সরু গড়ন, কমপ্যাক্ট ইঞ্জিন এবং পরিমিত মাইলেজ থাকার কারণে এই বাইকটি সবার পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। সত্যি বলতে এই টাইপের বাইক কেনার প্রবণতাও আজকাল অনেক বেড়ে গিয়েছে। তাছাড়া বাইকটি বেশ সাশ্রয়ীও, দেশের বৃহত্তর জনসংখ্যার আর্থিক অবস্থার কথা মাথায় রেখে এর দাম ধরা হয়েছে বাংলাদেশে মাত্র ৬৯,০০০ টাকা

ওয়ালটন স্টাইলেক্স নিউ

ওয়ালটন স্টাইলেক্স নিউ

  • ইঞ্জিন টাইপ – সিঙ্গেল সিলিন্ডার ৪ স্ট্রোক
  • ডিসপ্লেসমেন্ট (সিসি) – ৯৭
  • সর্বোচ্চ পাওয়ার – ৬.১৮ বিএইচপি @ ৮০০০ আরপিএম
  • সর্বোচ্চ টর্ক/ ঘূর্ণন – ৬.৮ নিউটন-মিটার (N-m) @ ৬০০০ আরপিএম
  • চূড়ান্ত গতি/ স্পিড – ৮০ কি.মি. প্রতি ঘন্টা (আনুমানিক)
  • মাইলেজ – ৭০ কি.মি. প্রতি লিটার (কম্বাইনড)
  • কুলিং – এয়ার কুলিং
  • স্টার্ট করার পদ্ধতি – ইলেক্ট্রিকএবং সেলফ-স্টার্ট
  • ইগনিশন টাইপ – সিডিআই (স্পার্ক)
  • গিয়ার – ৪ গতির কনস্ট্যান্ট মেশ গিয়ারবক্স
  • ক্লাচ – মাল্টি-ডিস্ক, ওয়েট টাইপ
  • সামনের সাসপেনশন – টেলেস্কোপিক হাইড্রোলিক শক অ্যাবজর্বার
  • পেছনের সাসপেনশন – অ্যাডজাস্টেবল শক অ্যাবজর্বার সহ সুইং আর্ম
  • ব্রেক (সামনে/পেছনে) – মেকানিক্যাল ড্রাম

ওয়ালটন মোটরস – ওয়ালটন গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান, প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল সেই ১৯৭৭ সালে। বাংলাদেশে সর্বপ্রথম মোটর সাইকেল উৎপাদন শুরু হয়েছিল তাদের হাত ধরেই। তাদের বিশাল তালিকায় ৮০ থেকে ১৫০ সিসি পর্যন্ত মোটরবাইক রয়েছে।

ওয়ালটন স্টাইলেক্স সিরিজের লেটেস্ট এডিশনের বাইক হলো ওয়ালটন স্টাইলেক্স নিউ। এতে ফিচার করা হয়েছে বিখ্যাত ওএইচসি ইঞ্জিন প্রযুক্তি যা ইঞ্জিনের অতিরিক্ত শব্দকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। এটি যথেষ্ট ব্যবহার উপযোগী এবং সাশ্রয়ী একটি বাইক, যাতে তাপ সুরক্ষা গার্ডের সাথে যুক্ত হয়েছে একটি স্টাইলিশ সাইলেন্সার। আর এটি আপনাদের দিচ্ছে আকর্ষণীয় ৭০ কি.মি. প্রতি ঘন্টা মাইলেজ, যা এই বাইকটিকে করেছে বাজেটের মধ্যে সেরা জ্বালানী সাশ্রয়ী বাইকগুলোর মধ্যে একটি। বর্তমানে বাইকটির দাম হচ্ছে বাংলাদেশে মাত্র ৭২,৫০০ টাকা

হিরো এইচএফ ডিলাক্স

হিরো এইচএফ ডিলাক্স

  • ইঞ্জিন টাইপ – ৪ স্ট্রোক, সিঙ্গেল সিলিন্ডার ওএইচসি
  • ডিসপ্লেসমেন্ট (সিসি) – ৯৭.২
  • সর্বোচ্চ পাওয়ার – ৮.২ বিএইচপি @ ৮০০০ আরপিএম
  • সর্বোচ্চ টর্ক/ ঘূর্ণন – ৮.০৫ নিউটন-মিটার (N-m) @ ৫০০০ আরপিএম
  • চূড়ান্ত গতি/ স্পিড – ৯০ কি.মি. প্রতি ঘন্টা (আনুমানিক)
  • মাইলেজ – ৬৫ কি.মি. প্রতি লিটার (কম্বাইনড)
  • কুলিং – এয়ার কুলিং
  • স্টার্ট করার পদ্ধতি – কিক স্টার্ট
  • ইগনিশন টাইপ – ডিজিটাল সিডিআই
  • গিয়ার – ম্যানুয়াল; ৪ গতির
  • সামনের সাসপেনশন – টেলেস্কোপিক হাইড্রোলিক শক অ্যাবজর্বার
  • পেছনের সাসপেনশন – ২ স্টেপ অ্যাডজাস্টেবল হাইড্রোলিক শক অ্যাবজর্বার সহ সুইং আর্ম
  • ব্রেক (সামনে) – ১৩০ মি.মি. ড্রাম
  • ব্রেক (পেছনে) – ১১০ মি.মি. ড্রাম

হিরো মোটর কর্পোরেশন লিমিটেড হচ্ছে একটি ভারতীয় মোটরসাইকেল ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি। ইন্ডিয়ার নিউ দিল্লিতে অবস্থিত এই কোম্পানিটি আগে হিরো হোন্ডা নামক একটি যৌথ সংগঠন হিসেবে সুপরিচিত ছিল। বর্তমানে এই উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় দুই চাকার বাহন উৎপাদনকারী কোম্পানি হলো এই হিরো, যারা ভারতীয় মোটরবাইক মার্কেটের ৪৬ শতাংশ শেয়ার ধরে রেখেছে। ইন্ডিয়ার হিরো সাইকেলস এবং জাপানের হোন্ডা কোপানির যৌথ উদ্যোগে হিরো মোটর কর্পোরেশনের যাত্রা শুরু হয় ১৯৮৪ সালে। পরবর্তীতে ২০১০ সাথে যখন হোন্ডা এই জুটি ভেঙ্গে আলাদা হয়ে যায়, তখন হিরো তাদের সবগুলো শেয়ার কিনে নেয় এবং এভাবেই তাদের নতুন উদ্যমে পথচলা শুরু হয়।

যৌথ প্রতিষ্ঠানের সমাপ্তির কারণে আগের হিরো সিডি ডিলাক্স নামে বিক্রি হওয়া বাইকটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় হিরো এইচএফ ডিলাক্স। তারপর দক্ষিণ এশিয়ার মার্কেটে এই নামেই বাইকটি বিক্রি হতে থাকে। এই মডেলটি হচ্ছে নিত্যদিন চলাচলের উপযোগী একটি বাইক, যা তার সাশ্রয়ী দাম, ব্র্যান্ড ভ্যালু এবং স্থায়ী গঠনের জন্য ব্যাপক জনপ্রিয়। বিগত কয়েক বছরে এই মডেলটিতে কিছু পরিবর্তন ও আপগ্রেড আনা হয়েছে – বর্তমানে এতে রয়েছে একটি ইলেক্ট্রিক স্টার্ট এবং থ্রিডি গ্রাফিক্স। আগে উল্লেখ করা মডেলটির মতই হিরো এইচএফ ডিলাক্স গর্বের সাথে আপনাদের দিচ্ছে উচ্চত্তর ৭০ কি.মি. প্রতি লিটার মাইলেজ। বর্তমানে বাংলাদেশে এই বাইকটির দাম হলো মাত্র ৮২,০০০ টাকা

হিরো প্যাশন এক্স প্রো

হিরো প্যাশন এক্স প্রো

  • ইঞ্জিন টাইপ – ৪ স্ট্রোক সিঙ্গেল সিলিন্ডার ওএইচসি
  • ডিসপ্লেসমেন্ট (সিসি) – ১০৯.১৫
  • কমপ্রেশন অনুপাত – ১০:১
  • সর্বোচ্চ পাওয়ার – ৭ কিলোওয়াট @ ৭৫০০ আরপিএম
  • সর্বোচ্চ টর্ক/ ঘূর্ণন – ৯ নিউটন-মিটার (N-m) @ ৫৫০০ আরপিএম
  • চূড়ান্ত গতি/ স্পিড – ৮৭ কি.মি. প্রতি ঘন্টা
  • মাইলেজ – ৮৪ কি.মি. প্রতি লিটার
  • কুলিং – এয়ার কুলিং
  • স্টার্ট করার পদ্ধতি – সেলফ (আই৩ সহ) এবং কিক
  • গিয়ার – ৪ গতির কনস্ট্যান্ট মেশ গিয়ারবক্স
  • ক্লাচ – মাল্টি-প্লেট ওয়েট ক্লাচ
  • সামনের সাসপেনশন – টেলেস্কোপিক হাইড্রোলিক শক অ্যাবজর্বার
  • পেছনের সাসপেনশন – ৫ স্টেপ অ্যাডজাস্টেবল হাইড্রোলিক শক অ্যাবজর্বার সহ সুইং আর্ম
  • ব্রেক (সামনে) – ডিস্ক ২৪০ মি.মি., ড্রাম ১৩০ মি.মি.
  • ব্রেক (পেছনে) – ড্রাম ১৩০ মি.মি.

হিরো মোটর কর্পোরেশনের আরো একটি জনপ্রিয় মডেলের নাম হলো এই হিরো প্যাশন এক্স প্রো। ইন্টিগ্রেটেড ব্রেকিং সিস্টেম (আইবিএস) -এর সাথে এতে রয়েছে আই৩ প্রযুক্তির ইঞ্জিন। সেজন্য আগের ভার্সনগুলোর তুলনায় প্যাশন এক্স প্রো আপনাদের দিতে পারে উচ্চতর পারফর্ম্যান্স। এতে ফিচার করা হয়েছে একটি সিগনেচার এলইডি টেইল ল্যাম্প, আরামদায়ক সিট এবং সামগ্রিক ভাবে এক সাহসী স্পোর্টি স্টাইল।

এই প্রিমিয়াম ধাঁচের বাইকটির বর্তমান দাম বাংলাদেশে মাত্র ১,০২,৯৯০ টাকা

হোন্ডা সিডি৮০

হোন্ডা সিডি৮০

  • ইঞ্জিন টাইপ – ৪ স্ট্রোক, ওএইচসি ইঞ্জিন
  • ডিসপ্লেসমেন্ট (সিসি) – ৭২
  • সর্বোচ্চ পাওয়ার – ৩.২ কিলোওয়াট (৪.৪ বিএইচপি) @ ৬৫০০ আরপিএম
  • সর্বোচ্চ টর্ক/ ঘূর্ণন – ৫.১৬ নিউটন-মিটার (N-m) @ ৫৫০০ আরপিএম
  • চূড়ান্ত গতি/ স্পিড – ৮০ কি.মি. প্রতি ঘন্টা (আনুমানিক)
  • মাইলেজ – ৬৮ কি.মি. প্রতি লিটার (কম্বাইনড)
  • কুলিং – এয়ার কুলিং
  • স্টার্ট করার পদ্ধতি – কিক
  • গিয়ার – ৪ গতির গিয়ার
  • সামনের সাসপেনশন – টেলেস্কোপিক
  • পেছনের সাসপেনশন – সুইং আর্ম
  • ব্রেক (সামনে/পেছনে) – অভ্যন্তরীণ সম্প্রসারিত শু ব্রেক

দক্ষিণ এশিয়ার মার্কেটে বিপুল জনপ্রিয়তার কারণে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে হোন্ডা নামটি ‘মোটরবাইক’ শব্দের প্রতিশব্দ হয়ে মানুষের মনে গেঁথে রয়েছে। জাপানিজ হোন্ডা মোটর কোম্পানি লিমিটেড হলো একটি মাল্টিন্যাশনাল কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান, যাদের উৎপাদন তালিকায় রয়েছে বিপুল সংখ্যক অটোমোবাইল, মোটরবাইক এবং পাওয়ার সামগ্রী। সেই ১৯৫৯ সাল থেকে হোন্ডা বিশ্বের সর্ববৃহৎ মোটরসাইকেল ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি হিসেবে রাজত্ব করছে এবং বিশ্বব্যাপী শত শত দেশে তাদের বাইক রপ্তানি করে চলেছে।

বাংলাদেশের মার্কেটে প্রচলিত বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী মডেলের বাইকের মধ্যে হোন্ডা সিডি৮০ অন্যতম। আগেকার দিনে মার্কেটের একমাত্র জ্বালানী সাশ্রয়ী ৪ স্ট্রোক মোটরবাইক ছিল এটি। কিন্তু ৮০ সিসির মোটরবাইক বলতে বাইক মালিকদের মধ্যে এখনও এই মডেলটি সবচেয়ে জনপ্রিয়। এর উচ্চতর কন্ট্রোল এবং স্থায়ী ডিজাইনের পাশাপাশি আকর্ষণীয় ইঞ্জিনের গঠন এবং টেকসই কোয়ালিটির  জন্য সিডি৮০ বাইকটি আজও বাংলাদেশী গ্রাহকদের মনে আত্মবিশ্বাসের প্রতিচ্ছবি হয়ে রয়েছে।

নতুন সংযোজন কিংবা আপগ্রেডের দিক থেকে বছরের পর বছর ধরে এই মডেলটিতে যান্ত্রিকভাবে কোন পরিবর্তনই আনা হয়নি, কিন্তু বাজারে একে নানা রকম নতুন রঙের বডিতে পাওয়া যাচ্ছে। হোন্ডা সিডি৮০ মডেলটি তুলনামূলক বেশ সাশ্রয়ী, যার দাম বাংলাদেশে এখন মাত্র ৮৬,০০০ টাকা

হোন্ডা লিভো

হোন্ডা লিভো

  • ইঞ্জিন টাইপ – ৪ স্ট্রোক, এসআই ইঞ্জিন
  • ডিসপ্লেসমেন্ট (সিসি) – ১০৯.১৯
  • সর্বোচ্চ পাওয়ার – ৬.১০ কিলোওয়াট (৮.২ বিএইচপি) @ ৭৫০০ আরপিএম
  • সর্বোচ্চ টর্ক/ ঘূর্ণন – ৮.৬৩ নিউটন-মিটার (N-m) @ ৫৫০০ আরপিএম
  • চূড়ান্ত গতি/ স্পিড – ৮৬ কি.মি. প্রতি ঘন্টা (আনুমানিক)
  • মাইলেজ – ৬৫ কি.মি. প্রতি লিটার (কম্বাইনড)
  • কুলিং – এয়ার কুলিং
  • স্টার্ট করার পদ্ধতি – সেলফ/ কিক
  • গিয়ার – ৪ গতির গিয়ার, ম্যানুয়াল
  • সামনের সাসপেনশন – টেলেস্কোপিক
  • পেছনের সাসপেনশন – স্প্রিং লোডেড হাইড্রোলিক
  • ব্রেক (সামনে) – ডিস্ক ২৪০ মি.মি./ ড্রাম ১৩০ মি.মি.
  • ব্রেক (পেছনে) – ড্রাম ১৩০ মি.মি.

এটি হচ্ছে হোন্ডার আরেকটি জনপ্রিয় মডেল। সম্প্রতি হোন্ডা লিভো মার্কেটে আরেকটি নতুন ভার্সন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে – হোন্ডা লিভো ডিস্ক ২০১৯, যা কি না একই বডি এবং ইঞ্জিনে নিয়ে এসেছে সম্পূর্ণ নতুন ধরণের একটি লুক। নান্দনিক স্টাইল, আকর্ষণীয় গ্রাফিক্স এবং সামর্থ্যের মধ্যে দাম থাকার কারণে শহরে চলাচলকারী মধ্যবিত্ত মানুষের মাঝে এটি একটি জনপ্রিয় বাইকের মডেল। এর ম্যানুফ্যাকচারিং পদ্ধতি বাংলাদেশে চলে আসার কারণে বর্তমানে এই মোটরবাইকটির দাম ধরা হয়েছে মাত্র ১,১৬,০০ টাকা

টিভিএস মেট্রো কেএস

টিভিএস মেট্রো কেএস

  • ইঞ্জিন টাইপ – ৪ স্ট্রোক, সিঙ্গেল সিলিন্ডার
  • ডিসপ্লেসমেন্ট (সিসি) – ৯৯.৭
  • সর্বোচ্চ পাওয়ার – ৭.৫ বিএইচপি @ ৭৫০০ আরপিএম
  • সর্বোচ্চ টর্ক/ ঘূর্ণন – ৭.৮ নিউটন-মিটার (N-m) @ ৫০০০ আরপিএম
  • চূড়ান্ত গতি/ স্পিড – ৯০ কি.মি. প্রতি ঘন্টা (আনুমানিক)
  • মাইলেজ – ৮৫ কি.মি. প্রতি লিটার (কম্বাইনড)
  • কুলিং – এয়ার কুলিং
  • স্টার্ট করার পদ্ধতি – কিক স্টার্ট
  • ইগনিশন টাইপ – এসি ডিজিটাল ইগনিশন
  • গিয়ার – ম্যানুয়াল; ৪ গতির গিয়ার
  • সামনের সাসপেনশন – টেলেস্কোপিক হাইড্রোলিক ফর্ক (১১০ মি.মি. স্ট্রোক)
  • পেছনের সাসপেনশন – ৫ স্টেজ অ্যাডজাস্টেবল শকার (৭৯ মি.মি স্ট্রোক)
  • ব্রেক (সামনে) – ড্রাম, ১১০ মি.মি. ডিআইএ (হাতে চালিত)
  • ব্রেক (পেছনে) – ড্রাম, ১১০ মি.মি. ডিআইএ (পায়ে চালিত)

টিভিএস গ্রুপের সদস্য টিভিএস মোটর হলো একটি মাল্টিন্যাশনাল মোটরসাইকেল কোম্পানি, যার মূল অবস্থান ভারতের চেন্নাই-এ। ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানিকারক কোম্পানি হচ্ছে এই টিভিএস। তাদের নানা ধরণের ডিজাইন ও দামের মোটরসাইকেল বিশ্বব্যাপী প্রায় ৬০টি দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে।

টিভিএস মেট্রো কেএস মডেলটি কিছু কিছু দেশে ভিন্ন নামে পাওয়া যাচ্ছে – ভারতে সম্পূর্ণ একই মডেলটির নাম স্টার স্পোর্ট। এটি একটি নিত্য নৈমিত্তিক, জ্বালানী সাশ্রয়ী এবং সাশ্রয়ী দামের বাইক, যা বাংলাদেশে দিন কে দিন আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। একটি প্রাথমিক স্তরের বাইক হওয়া সত্ত্বেও মডেলটির সাথে সংযুক্ত ফিচার এবং ব্র্যান্ড ভ্যালু এর দামকে ছাপিয়ে যায় অনেক উপরে। সেজন্যই আমাদের মার্কেটে থাকা তুলনামূলক বেশি অর্থনৈতিক এবং সাশ্রয়ী মূল্যের বাইকগুলোর মধ্যে এটি একটি। ২০১৯ সালে টিভিএস নিয়ে এসেছে একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন লুক – যুক্ত হয়েছে থ্রিডি গ্রাফিক্স এবং নতুন নতুন কালার কম্বিনেশন। এই বছর মডেলটিতে আনা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হচ্ছে এতে সামঞ্জস্যপূর্ণ সিনক্রোনাইজড ব্রেকিং সিস্টেম (এসবিএস) – এর সংযোজন।

বর্তমানে বাংলাদেশে মোটরবাইকটির দাম ধরা হয়েছে মাত্র ৮৮,৯০০ টাকা

বাজাজ ডিসকভার ১২৫

বাজাজ ডিসকভার ১২৫

  • ইঞ্জিন টাইপ – সিঙ্গেল সিলিন্ডার, ২টি ভালভ, ExhausTEC (এক্সহস্টেক) সহ ডিটিএস-আই
  • ডিসপ্লেসমেন্ট (সিসি) – ১২৪.৬
  • সর্বোচ্চ পাওয়ার – ১১.০ পিএস @ ৭৫০০ আরপিএম
  • সর্বোচ্চ টর্ক/ ঘূর্ণন – ১১.০ নিউটন-মিটার (N-m) @ ৫০০০ আরপিএম
  • চূড়ান্ত গতি/ স্পিড – ১০০ কি.মি. প্রতি ঘন্টা (আনুমানিক)
  • মাইলেজ – ৫৫ কি.মি. প্রতি লিটার (কম্বাইনড)
  • স্টার্ট করার পদ্ধতি – ইলেক্ট্রিক কিক
  • গিয়ার – ম্যানুয়াল; ৫ গতির গিয়ার
  • সামনের সাসপেনশন – ১৪০ মি.মি. ফর্ক ট্রাভেল, টেলেস্কোপিক
  • পেছনের সাসপেনশন – ১৪০ মি.মি. রিয়ার হুইল ট্রাভেল, নাইট্রক্স (গ্যাস ভরা)
  • ব্রেক (সামনে) – ডিস্ক/ ড্রাম সাইজ ১৩০ মি.মি.
  • ব্রেক (পেছনে) – ড্রাম ১৩০ মি.মি.

ভারতীয় দুই চাকার বাহনের বিশ্বজোড়া কোম্পানি এবং তিন চাকার বাহন ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি বাজাজ অটো লিমিটেডের মূল অবস্থান মহারাষ্ট্রের পুনে-তে। বাজাজ অটো মূলত বাজাজ গ্রুপের একটি অংশ। ১৯৪০ সালের দিকে ভারতের রাজস্থানে একে প্রতিষ্ঠা করা হয়।

ডিসকভার ১২৫ মডেলটি আসলে সাধারণের সামর্থ্যের মধ্যে একটি আধুনিক বাইক, যার বর্তমান দাম বাংলাদেশে মাত্র ১,৩১,৫০০ টাকা। স্টাইল, মাইলেজ এবং দামের এক অসাধারণ সমন্বয় এই বাইকের প্রধাণ আকর্ষণ।

২০১৮ সালে এই মডেলটিতে অনেকগুলো পরিবর্তন করা হয়, যার মধ্যে সম্পূর্ণ নতুন এলইডি ডিআরএল ল্যাম্প, নতুন যুগের ডিজিটাল কনসোল, আরো উন্নত গ্রাফিক্স এবং টেইল ল্যাম্প ছিল অন্যতম। সম্প্রতি এই মডেলটি দু’টি ভিন্ন কালার কম্বিনেশনে পাওয়া যাচ্ছে – প্রাকৃতিক কালো রঙের সাথে হয় গাঢ় নীল কিংবা গাঢ় লাল।

এবার সিদ্ধান্ত নিন কোনটি কিনবেন

দিনশেষে একটি মোটরবাইকে আপনি আসলে কি খুঁজছেন সেটাই আপনার সিদ্ধান্তের আসল চাবিকাঠি। আপনার কোন পছন্দের মোটরবাইক ব্র্যান্ড আছে নাকি নির্দিষ্ট একটি বাজেট ভেবে রেখেছেন, তার সবকিছুই এখানে গুরুত্বপূর্ণ। আপনার যদি আরও একটু বেশি বাজেট থাকে তবে আপনার আমাদের আরেকটি আর্টিকেল পড়ে নিনঃ বাংলাদেশের জনপ্রিয় মধ্য সারির বাইকগুলোর দাম

যদিও এখানে যতগুলো মোটরবাইকের নাম আমরা উল্লেখ করেছি তার সবগুলোর দামই বাংলাদেশে ১.৫ লাখ টাকার মধ্যে, তবুও প্রত্যেকটি মোটরবাইক মডেলের দাম এবং ফিচারের মধ্যে বেশ ভালো রকম পার্থক্য রয়েছে। প্রত্যেকটি মডেলেই তার নিজ নিজ অনন্য কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তাই প্রত্যেকটি মডেলই তার নিজস্ব গুণের জন্য গ্রাহকের কাছে পছন্দের দাবিদার হয়ে উঠতে পারে।

আপনি যদি পাঠাও কিংবা উবারের মত কোন সার্ভিস কোম্পানিতে একজন রাইডার হিসেবে কাজ করার উদ্দেশ্যে একটি বাইকে বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা করে থাকেন, তাহলে উচ্চতর মাইলেজ সমৃদ্ধ একটি মোটরবাইক কেনাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

নতুন হোক কিংবা ব্যবহৃত — হাজার হাজার মোটরবাইকের বিজ্ঞাপন খুঁজে পেতে এবং মোটরবাইকের দাম যাচাই করতে নির্ভাবনায় ব্রাউজ করুন Bikroy.com

আপনার পছন্দের তালিকায় আরো কোনো নিম্ন সারির মোটরবাইক রয়েছে কি? নিচে আমাদের কমেন্ট সেকশনে জানাতে ভুলবেন না যেন!

Facebook Comments
সাবস্ক্রাইব করুন

No spam guarantee.

Show More

Related Articles

Back to top button
Close
Close