ইলেকট্রনিক্স

এয়ারপড কি আর এর গুরুত্ব কতখানি?

যারা অ্যাপেলের নতুন নতুন খবরের খোঁজ রাখেন তারা আইফোন ৭-এর হেডফোন জ্যাক অপসারণ সম্পর্কে তুমুল বিতর্কের কথা জেনে থাকবেন। খবরের ধারাবাহিকতায় অ্যাপেলের নতুন আইপডের কথাও নিশ্চয়ই সবাই শুনেছেন। তাহলে এই এয়ারপড গুলো কি এবং এর গুরুত্ব কি?

earpods

এয়ারপড অ্যাপেলের এয়ারপড হেডফোনের উন্নততর সংস্করণ যা কিনা প্রতিটি আইফোন প্যাকেজের সাথেই দেয়া হয়। এয়ারপডগুলো দেখতে এয়ারপড হেডফোনের মত কিন্তু এগুলোতে কোন রকম তার নেই এবং এদের স্টেমগুলো একটু বড়। এয়ারপডগুলো ব্লু টুথের সাহায্যে কাজ করে এবং এতে ডব্লিউ ১ নামের একটি বিশেষ চিপ সংযোজিত আছে যা অ্যাপেলের পণ্যগুলোর সাথে খুব সহজেই সংযুক্ত করতে সাহায্য করে। আপনি ব্লু টুথের সাহায্যে অ্যাপেলের পণ্য ছাড়াও অন্যান্য ডিভাইসে সংযুক্ত করতে পারবেন তবে এর বেশিরভাগ ফিচার আপনি ব্যবহার করতে পারবেন না।

w1

আপনি হয়ত জানতে চাইবেন যে এই ফিচারগুলো কি? এয়ারপডগুলো এক্সিলারোমিটার এবং প্রক্সিমিটি সেন্সরের উপর ভিত্তি করে তৈরি যার কারণে আপনি যখনই একটি এয়ারপড খুলবেন তখন আপনা আপনিই ডিভাইসের মিউজিক প্লেব্যাক বন্ধ হয়ে যাবে। এগুলোর রুডিমেন্টারি টাচ কন্ট্রোলও আছে যার মাধ্যমে আপনি মাত্র একটি ট্যাপের সাহায্যেই গান প্লে বা পজ করতে পারবেন অথবা দুটি ট্যাপের সাহায্যে সিরিকে চালু করতে পারবেন। যেহেতু হেডফোনগুলোর মধ্যে কোন লাইন কন্ট্রোল নেই সেহেতু গান বদলাতে কিংবা শব্দ বাড়াতে বা কমাতে হলে আপনাকে সিরির সাহায্য নিতে হবে। এয়ারপড ব্যবহারের একটি বড় সুবিধা হল আপনার অ্যাপেল একাউন্ট দিয়ে যদি একাধিক অ্যাপেল ডিভাইস লগ ইন করা থাকে তবে আপনি অ্যাপেল ডিভাইসগুলোতে খুব সহজেই সুইচ করে এটি ব্যবহার করতে পারবেন। তাছাড়া এয়ারপডগুলো এমন একটি কেস সহ পাওয়া যায় যেই কেসের মাধ্যমে এটি রিচার্জ করা যায়। এই কেস ডিভাইসটির ব্যাটারী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত চার্জ দেয়ার ক্ষমতা রাখে যা এয়ারপডের ফিচার হিসেবে সত্যিই অসাধারণ। কেননা একটি পুরোপুরি চার্জকৃত এয়ারপড সর্বোচ্চ ৫ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করতে সক্ষম তাও আবার শুধুমাত্র অপটিমাইজড অ্যাপেল ডিভাইসের ক্ষেত্রে।

case

অনেকেই হয়ত তারবিহিন এয়ারপড ব্যবহারের সময় সহজেই হারিয়ে ফেলার সম্ভাবনা ব্যক্ত করেছেন। এয়ারপড গুলো এমন ভাবে তৈরি যা আরও নিশ্চিতভাবে কানে আটকে থাকবে এবং কান থেকে খুলে পরে যাবার সম্ভাবনাকে বহুলাংশে কমিয়ে আনবে।

seamless

এয়ারপডের ফিচারগুলো শুনে হয়ত এখনও পুরো বিষয়টিকে  আপনার  বেশ দারুণ মনে হচ্ছে। হেডফোনের বাজারে নিঃসন্দেহে এয়ারপড একটি আকর্ষণীয় এবং দারুণ সংযোজন, তবে চিন্তার বিষয় এর মূল্য নিয়ে। এয়ারপডের বাজার মূল্য ১৫৯ ডলার এবং যদি একটি এয়ারপড হারিয়ে যায় তবে তার প্রতিস্থাপন মূল্য ৭৯ ডলার। আপনি অ্যাপেলের এই এয়ারপডগুলো সম্পর্কে নানান রকমের অভিযোগ শুনতে থাকবেন, অভিযোগ শুনবেন এগুলো সহজেই হারিয়ে যাওয়া এবং অ্যাপেল ছাড়া অন্য কোন ডিভাইসে এগুলো ব্যবহারের অযোগ্যতা সম্পর্কে। যাই হোক, আমার মতে বিতর্কের মূল বিষয়টি হল, এয়ারপড হল এয়ারপড হেডফোনের তারবিহীন সংস্করণ। অর্থাৎ ২৯ ডলারের হেডফোনের সাথে তুলনা করলে এয়ারপডগুলোর ১৬০ ডলার মূল্য একেবারেই অযৌক্তিক। কেননা এতে অন্য এমন কোন ফিচার সংযোজন করা হয়েনি যার কারণে এত দাম হাঁকা হবে। আপনি হয়ত বাংলাদেশের এলাকাভিত্তিক স্টোরগুলোতে অল্পসংখ্যক এয়ারপড পাবেন কিন্তু নিশ্চিত থাকুন যে আপনাকে বাংলাদেশি টাকায় ১৬০ ডলারেরও বেশি দাম দিয়ে তাদের কাছে থেকে এগুলো কিনতে হবে।

in-ear

প্রতিটি প্রথম জেনারেশন অ্যাপেল পণ্যের মত এয়ারপডও বাজারে এসেছে কিছু প্রকট ত্রুটি এবং “অ্যাপেল ট্যাক্স”-এর ছত্রছায়ায়। যদিও এটিই বাজারের একমাত্র তারবিহীন এয়ারফোন নয়। আমরা অতীত অভিজ্ঞতা থেকে জানি যে যখন অ্যাপেল কোন পণ্য বাজারে ছাড়ে তখন অন্যান্য কোম্পানিগুলোও প্রতিযোগিতার বশে অনুরূপ পণ্য বাজারে আনে এবং অ্যাপেলকে ধরাশায়ী করে ফেলার চেষ্টা করে। সে হিসেবে বলা যায় যে ২০১৭ সালে আমরা তারবিহীন এয়ারফোন নিয়ে অ্যাপেল এয়ারপডের সাথে মূল্য এবং সাউন্ড কোয়ালিটি নিয়ে প্রতিযোগিতা দেখতে যাচ্ছি। তার আগ পর্যন্ত এয়ারপডের সেকেন্ড জেনারেশনের জন্য অথবা অন্য কোম্পানির অনুরূপ এয়ারফোনের জন্য অপেক্ষা করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। চলুন না এবার একটু দৃষ্টিপাত করা যাক মূল্যবান এয়ারপড নিয়ে মেতে ওঠা অ্যাপেল অনুরাগীদের দিকে!

Facebook Comments
সাবস্ক্রাইব করুন

No spam guarantee.

Show More

Related Articles

Back to top button
Close
Close