ইলেকট্রনিক্স

মাঝারি দামের ল্যাপটপের ক্রেতাদের জন্য নির্দেশনা

যখন একটি ল্যাপটপ কিনার সময় আসে তখন আপনার কাছে নানান রকমের অপশন আসতে পারে। অধিক অপশন সামনে থাকায় নিজের জন্যে উত্তম ল্যাপটপটি বেছে নিতে সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়। আপনি যদি একটি সাধারণ ল্যাপটপ কিনতে চান তাহলে দেখবেন এগুলি নানান রকম দামের হয়ে থাকে, তবে মাঝারি দামের ল্যাপটপগুলি দিয়ে ইমেইল আদান প্রদান, গেমস খেলা থেকে প্রায় সব ধরনের কাজ করা সম্ভব। তাই একটি মাঝারি দামে ভালো মানের ল্যাপটপ কিনতে সাহায্য করার জন্যেই গাইড দেয়া হলো।

আপনার বাজেট নির্ধারন করুন

একশ থেকে হাজার ডলার পর্যন্তও ল্যাপটপের দাম হতে পারে। আপনি যদি মাঝারি দামের মধ্যে কোনো ল্যাপটপ পেতে চান তাহলে আপনাকে এমন একটা ডিভাইস খুজে বের করতে হবে যেটাতে মোটামুটি সবকিছুই মাঝামাঝি পর্যায়ের হবে, সম্ভবত ৫০০ থেকে ৭০০ ডলারের ভেতরে দাম পড়বে। ল্যাপটপের অতিরিক্ত পাওয়ার আর আপনার কখনই কাজে লাগবে না এমন অনেক ফিচারের জন্য আপনাকে যে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে না সেটা নিশ্চিত হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ন। আর এটি করা মানেই হল যে আপনি এমন জিনিসের পেছনে টাকা খরচ করছেন যা আপনি কখনই ব্যবহার করবেন না। বরং এমন একটি দোকান খুজে বের করুন যেখানে আপনি স্বাচ্ছন্দে যেটাই কিনছেন তার ন্যায়সঙ্গত দাম দিতে পারবেন।

আপনার কি কি প্রয়োজন?

ল্যাপটপ কেনার পেছনে কারন ভিন্ন ধরনের হতে পারে। কিছু মানুষের জন্য ল্যাপটপ হল ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য অথবা ফটোগ্রাফির কাজে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজন। অন্যান্যদের জন্য ল্যাপটপ হল বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্যবহার করা যেমন বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করা কিংবা ইমেল চেক করা। এ কারনেই এটা ঠিক করা খুবই জরুরী যে আপনি কিভাবে ল্যাপটপটি ব্যবহার করছেন, যা আপনাকে আপনার প্রয়োজন সম্পর্কে ভালো ধারনা দিবে। উদাহরনস্বরুপ আপনি এমন কোন ডিভাইস খোঁজেন যেটা আপনাকে দ্রুত এবং ভালো ভাবে ছবি এডিট করতে পারে তবে সেক্ষেত্রে যেসব কম্পিউটারে অনেক গেমস এবং অন্যান্য জিনিস আছে সেগুলো খোঁজার প্রয়োজন নেই। থিউরির ক্ষেত্রে কেবল প্রযোজ্য যে ল্যাপটপে সবকিছু থাকা সবচেয়ে ভালো। যাইহোক, আপনার প্রয়োজনীয় সবকিছুই আছে এমন কম্পিউটার খুব ভালো দামে কিনতে পারেন, যার জন্য শুধু শুধু অতিরিক্ত টাকা দিতে হবে না।

ওজন কত

বেশির ভাগ লোক ল্যাপটপ কিনতে চায় কারন এটি পোর্টেবল এবং ভ্রমনে সাথে নেওয়া যায়। কিন্তু এমন অনেক ল্যাপটপও দেখা যায় যা তৈরি করার সময় এ বিষয়টা বিবেচনায় ন্ওেয়া হয় না বরং বেশি ওজনের অনেক কিছু দিয়ে সেটিকে ভারী করে ফেলা হয়, যার ফলে সেটি সুবিধামতো সাথে বহন করা যায় না। আপনি যখন মাঝারি দামের মধ্যে কোনো ল্যাপটপ কিনতে যাবেন তখন এর ওজন খেয়াল করবেন এবং সাথে বহন করতে পারবেন কিনা বিবেচনা করবেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আপনি হয়তো আপনার ল্যাপটপটি স্টেশনারি হিসাবেই রাখতে চাচ্ছেন এবং শুধু মাত্র এ কারনে যে এটি বাল্কি ডেস্কটপের চেয়ে ভালো। এটি খুবই ভালো এবং ওজন তখন খুব বেশি একটা সমস্যা করে না। কিন্তু আপনি যদি ছাত্র অথবা এমন কেউ হন যাকে অনেক ছুটোছুটি করতে হয় তাহলে কেনার সময় ওজনের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।

ব্যাটারির স্থায়িত্ব

ওজনের মতোই একইভাবে ল্যাপটপ তখনই ভালো যখন আপনি ভ্রমনে দীর্ঘসময় ধরে কাজ করতে পারবেন চার্জ করা ছাড়াই নিরবিচ্ছিন্নভাবে। বলা হয়ে থাকে সব ল্যাপটপের ব্যাটারিই দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করার উপযোগী নয়। এ কারনেই আপনাকে মাথায় রাখতে হবে চার্জ করানো ছাড়াই আপনাকে কতক্ষন বাইরে থাকতে হবে। যদি আপনি বাসায় বসে কাজ করার জন্য কোনো ল্যাপটপ চান তবে ব্যাটারি খুব বেশি গুরুত্বপূর্ন নয়। কিন্তু আপনি যদি সারাদিন বাসার বাইরে থাকেন এবং ল্যাপটপ চার্জ করার কোনো সুযোগ না পান তবে আপনাকে মোটামুটি ধরনের এমন ল্যাপটপ খুজতে হবে যার ব্যাটারির স্থায়িত্ব অনেক।

ফিচার

ল্যাপটপ অগনিত নতুন নতুন ফিচার দিয়ে থাকে, যার মধ্যে কতগুলো খুবই দরকারী আর অন্যগুলো অনেকের কাছেই নতুনই থেকে যায়। উদাহরণস্বরুপ কিছু ল্যাপটপের টাচস্ক্রিন প্যাড রয়েছে যা ট্যাবলেট ডিভাইসের মতো আলাদা করা যায়। এটি সত্যিই ভালো একটি ফিচার, এবং নান্দনিকও, কিন্তু এটা আসলে কম্পিউটারের জন্য কি সুবিধা দিবে সেটি বোঝা যায় না। ল্যাপটপের জন্য সুবিধাজনক এ ধরনের নতুন ফিচার না নেওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ন, বরং এমন ল্যাপটপই নেওয়া উচিৎ যেটিতে আপনার প্রয়েজনীয় সব ফিচার আছে। এসব কিছু মাথায় রেখে যদি আপনার কাছে এমন ল্যাপটপ প্রয়োজনীয় হয় যা টাচস্ক্রীন ট্যাবলেট হিসাবে ব্যাবহার করা যায় তবে আপনি সেই ফিচারগুলো নিতে পারেন। খেয়াল রাখতে হবে যে ফিচারগুলো সহজলভ্য এবং কখনোই এমন কিছু নিবেন না যা শুধু দেখতেই সুন্দর কিন্তু কখনো আপনি ব্যাবহারই করবেন না।

অন্যরা কি বলছে?

কোনো কম্পিউটার কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ল্যাপটপের রিভিউগুলো দেখুন অন্যরা কি বলছে তা জানার জন্য। কি ধরনের ল্যাপটপ আপনার জন্য উপযোগী তা জানতে ভালো ধারনা পেতে পারেন, আবার অন্যরা ডিভাইস হিসাবে কি ব্যবহার করছে তা দেখতে পারেন। আপনি যদি ব্যবসার কাজে ব্যবহার করার জন্য কোনো ল্যাপটপ নিতে চান তবে অন্যান্য যারা ব্যবসা করেন তাদের কাছ থেকে উপদেশ নিতে পারেন যে কোনটি আপনার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। আর আপনি যদি ছাত্র হয়ে থাকেন তবে আপনার অন্য বন্ধুরা কি ব্যবহার করছে সেগুলো দেখুন। ভালো ল্যাপটপ কেনার সময় আপনি অন্যরা কি বলছে সেটির উপর আস্থা রেখে ল্যাপটপ কিনতে পারেন।

আশেপাশের দোকান

আপনি যদি মাঝারি রেঞ্জের কোনো ল্যাপটপ কিনতে চান, তবে কেনার মতো অনেক জায়গাই পাবেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আপনি হয়তো ছাড় দিচ্ছে এমন ল্যাপটপ পেতে পারেন। এর মানে হচ্ছে আপনি একটি পাওয়ারফুল ডিভাইস পাচ্ছেন স্বাভাবিক দামের চেয়্ওে কম দামে। কেনার আগে আপনার আশেপাশের সবগুলো দোকানের দেওয়া বিভিন্ন সুযোগ- সুবিধা বিবেচনা করুন। এর ফলে আপনি আপনার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ডিভাইসটি কিনতে পারবেন।

ল্যাপটপ কেনা মানেই হচ্ছে একটি বড় বিনিয়োগ যা আপনি অনেক কাজে ব্যবহার করবেন। কিন্তু মাঝারি রেঞ্জের ভালো ল্যাপটপ কেনার জন্য আপনার প্রয়োজনীয় নয় এমন ফিচারে অতিরিক্ত টাকা যাতে ব্যয় করতে না হয় এবং সইেসাথে বাজেটের চেয়ে বেশি টাকা যাতে ব্যয় করতে না হয় তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য এই নির্দেশনাগুলো মাথায় রাখুন ।

Facebook Comments
সাবস্ক্রাইব করুন

No spam guarantee.

Show More

Related Articles

Back to top button
Close
Close