ইলেকট্রনিক্সহোম এবং লিভিং

এক নজরে বিভিন্ন এল জি রেফ্রিজারেটর

রেফ্রিজারেটরের ক্ষেত্রে এল জি অদ্বিতীয়। খাবার সংরক্ষণ থেকে শুরু করে বরফ তৈরি সহ সকল সুযোগ সুবিধাসম্পন্ন উচ্চ মানের এল জি রেফ্রিজারেটরের অবস্থান সবার উপরে। কিন্তু, যেহেতু পছন্দ করার মতো অনেক বিকল্প রয়েছে, তাই নিজের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আপনার ঘরের জন্য সঠিক রেফ্রিজারেটরটি খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন হতে পারে। আপনার সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তার জন্য এখানে কিছু বিষয় আলোচনা করা হল।

নতুন না কী পুরনো কিনবেন?

অন্যান্য জিনিসের মতো রান্নাঘরের জিনিসপত্র নতুন না কী পুরনো কিনবেন সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ নয়। এইসব জিনিসপত্রের একটি নির্দিষ্ট আয়ু রয়েছে, এবং আপনি কেনার পূর্বে সেটি কতদিন ব্যবহার করা হয়েছিল তা জানা জরুরী। একটি রেফ্রিজারেটরের আয়ু ১৩ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে হয়ে থাকে, কিন্তু এই সীমার উপরের দিকের সময় কেবল সিঙ্গেল-ডোর ইউনিটের জন্য। সচরাচর দুই দরজার আধুনিক যেই মেশিনগুলো ব্যবহার করা হয় সেগুলোর আয়ু এতো বেশী হয়না। আপনি যখন ব্যবহার করা একটি ইউনিট কিনবেন, তখন জিজ্ঞেস করে নিন সেটির বয়স কত-যদি সেটি সাত বছরের বেশী পুরনো হয় তবে আপনার অর্থ জমিয়ে রাখুন এবং এর বদলে নতুন একটি কিনুন। যখন কিনবেন তখন দীর্ঘ সময়ের কথা মাথায় রেখে কিনবেন; শুরুতেই লাভবান হওয়ার চেয়ে এমন বিনিয়োগ করা উচিৎ যা অনেক দিন টিকবে।

আর একটি বিষয় বিবেচনা করতে হবে, তা হল সেটি কিভাবে ব্যবহার করা হয়েছে? রেস্টুরেন্টে ব্যবহৃত রেফ্রিজারেটরের চাইতে ঘরে ব্যবহার করা রেফ্রিজারেটর বেশী দিন টিকবে। বাসার ইউনিটগুলো রেস্টুরেন্টের চাইতে কম খোলা হয়, এবং একটা সময় পর প্রতিনিয়ত উষ্ণায়ন-হিমায়ন প্রক্রিয়া মেশিনের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সবশেষে, মেশিনটি ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা সেটি নিশ্চিত করুন। পুরনো ব্যবহার করা কিনলে বিক্রেতাকে জিজ্ঞেস করুন কোন যন্ত্রাংশগুলো পরিবর্তন করা হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রেফ্রিজারেশন কয়েল সমস্যার মূল কারণ, অতিরিক্ত ব্যবহারের কারনে সময়ের সাথে সাথে তা পুড়ে যায়। এই যন্ত্রটি পরিবর্তনের খরচ মডেলের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন হতে পারে, এবং এই কাজটি কখনোই আপনার নিজের করা উচিৎ নয়; রেফ্রিজারেটরের অভ্যন্তরীণ সংবেদনশীল ইলেকট্রনিক্স এবং উচ্চ ভোল্টেজের কাজ একজন পেশাদার লোককে দিয়ে করানো উচিৎ।

বিদ্যুৎ সাশ্রয়

যদিও অধকাংশ এল জি মডেলই কর্মদক্ষ, তবুও এই মানদণ্ডটি বিবেচনা করতে হবে। কমদামে রেফ্রিজারেটর কিনলে তাতে হয়তো আপনার টাকা বাঁচবে কিন্তু সেটি যদি কর্মদক্ষ করে তৈরি করা না হয় তবে আপনি যেই টাকা বাঁচিয়েছেন, বিদ্যুৎ বিলে তাঁর চেয়ে বেশী খরচ হবে। সময় নিয়ে ভালো করে দেখে এনার্জি স্টার লোগো লাগানো মেশিন খুঁজে বের করুন, কারণ এর অর্থ এটি অন্যান্য মেশিনের চাইতে কম বিদ্যুৎ খরচ করে। আরেকটি বিবেচনার বিষয় এই যে, বয়সের সাথে সাথে এর কর্মদক্ষতা কমতে থাকে, তাই পুরনো কোনো ইউনিট নতুন ইউনিটের মতো কর্মদক্ষ হবে না।

ধারণ ক্ষমতা

আপনার কত বড় ইউনিটের প্রয়োজন? আপনি যদি একা থাকেন তবে একটি ফুল-সাইজ রেফ্রিজারেটর আপনার জন্য বেশী বড় হয়ে যাবে। তাঁর চেয়ে বরং ছোট থেকে মাঝারি আকারের ইউনিট বেছে নিন। কিন্তু আপনার যদি পরিবার থাকে এবং ঘরে অনেক লোক থাকে তবে এল জি-এর বড় ইউনিটগুলো দেখুন। বিভিন্ন আকারের নানা মেশিন রয়েছে যা থেকে আপনি আপনার পছন্দেরটি বেছে নিতে পারেন। ফ্রিজার-রেফ্রিজারেটর অনুপাত ইউনিটের উপর নির্ভর করে ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। এল জি তাঁর অধিকাংশ মডেলই বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের কথা চিন্তা করে তৈরি করে, তাই আপনি এই ইউনিটের ধারণ ক্ষমতা দেখে অবাক হতে পারেন কারণ একই ধরণের অন্যান্য মডেলে আপনি শেলফ ও ড্রয়ারের এমন সুবিধা নাও পেতে পারেন।

আকার

আর যে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে তা হচ্ছে, ইউনিটটির রান্নাঘরে জায়গা হবে কিনা। এই ব্যাপারটি যতই জানা থাকুক না কেন, অনেক মানুষই জায়গার পরিমাণ আন্দাজ করতে পারেননা, এতে ইউনিটটি যে শুধু রান্নঘরেই রাখার জায়গা হয় না তা নয় বরং অনেক সময় তা দরজা দিয়ে প্রবেশ করানোও কঠিন হয়ে যায়। এই অবস্থায় তাঁদেরকে সেটি বাইরে বা গ্যারেজে রাখতে হয়। তাই কিনতে যাওয়ার আগেই আপনার ঘর ও রান্নাঘরের মাপ নিয়ে নিন এবং সেই মাপের উপর ভিত্তি করে আপনার সিদ্ধান্ত নিন। কয়েক হাজার টাকা খরচ করে কোনো জিনিস কিনলেন অথচ তা ব্যবহার করতে পারলেন না আপনি নিশ্চয়ই এমনটি চাইবেন না।

তাপমাত্রা ব্যবস্থাপনা

যদিও অধিকাংশ মডেলেই আপনার কাজ চলবে কিন্তু সব রেফ্রিজারেটরের লেবেলিং এক রকম নয়। রেফ্রিজারেটরের অভ্যন্তরীণ আদর্শ তাপমাত্রা ৩৪ ডিগ্রী ফারনেহাইট এবং ফ্রিজারের অভ্যন্তরে ৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট। কিন্তু কিছু কিছু ইউনিটে আসল তাপমাত্রা না দিয়ে তা ০ থেকে ১০ এর একটি স্কেলে দেয়া থাকে। আপনি যদি এরকম এককের সম্মুখীন হন তবে রেফ্রিজারেটরের অভ্যন্তরের তাপমাত্রা মাপতে একটি কমদামী থার্মোমিটার কিনে নিতে পারেন। এর ফলে রেফ্রিজারেটরের কোনো সমস্যা হলে বা ঠিক মতো কাজ না করলে আপনি সহজেই তা বুঝতে পারবেন।

সহজ ব্যবহারবিধি

খেয়াল করে দেখুন ড্রয়ার খোলার সময় তা আঁটকে যায় কিনা; একদম খালি অবস্থায় সেগুলো পরীক্ষা করে দেখুন। ওয়াটার ডিসপেন্সার এবং আইস মেশিন ব্যবহার সহজ কিনা সেদিকে খেয়াল রাখুন, বিশেষ করে যদি আপনার পরিবার থেকে থাকে। কেননা আপনি নিশ্চয়ই চাইবেন আপনার সন্তানরা যাতে সহজেই পিপাসায় ঠাণ্ডা পানীয় পান করতে পারে। আর এটাও নিশ্চিত করুন যাতে এর দরজা খুব বেশী ভারী না হয়; আপনি নিশ্চয়ই চাইবেন না যে বৃদ্ধ বা শিশুরা দরজা খোলার পর দরজা বন্ধ হওয়ার সময় তাতে আঁটকে পড়ুক।

সংসারের যন্ত্রপাতি কেনার সময়, সব দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আপনার ইউনিটটি ভালোভাবে পরীক্ষা করে নিন, তা আপনি নতুনই কিনুন বা পুরনো, তবে পুরনো ব্যবহার করা জিনিস কিনলে সে ক্ষেত্রে বিশেষ খেয়াল করতে হবে। সবসময় ভালো মানের জিনিস কিনবেন যাতে তা অনেক বছর ব্যবহার করতে পারেন। সর্বোপরি, সংসারের যেকোনো যন্ত্রপাতি কেনা অনেক বড় একটি বিনিয়োগ, কিন্তু রেফ্রিজারেটর কিনতে আরও বেশী খরচ হতে পারে। সবার আগে, সম্ভাব্য সমস্যাগুলো ভালো করে খতিয়ে না দেখে বিনিয়োগ করেবেন না।

Facebook Comments
সাবস্ক্রাইব করুন

No spam guarantee.

Show More

Related Articles

Back to top button
Close
Close